পুষ্পিতা চেঞ্জ করে আমার সামনে দাড়ালো।ভেজা চুলে ওকে বেশ অন্যরকম লাগছে।ওকে এই অবস্থায় বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো।বাইরে আবারো সজোরে বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে।আশ্চর্যের বিষয় হলো কারেন্ট এখনো যায়নি।আমি নিজেকে সামলে নিয়ে ওকে বললাম-


"দাঁড়িয়ে কেন আছো? বসো..


পুষ্পিতা আমার পাশে বসতে বসতে বললো


"প্রণব আসলে…


"বলো..


"তোমাকে অনেক বার ফোনে ট্রাই করেছি।তোমাকে ফোনে পাচ্ছিলাম না।আমি কিছুদিন তোমার এইখানে থাকলে তোমার কোন সমস্যা হবে?


"না আমার আবার কি সমস্যা হবে।এইখানে কয়েকটা রুম ফাকাই থাকে।তুমি যেকোনো একটাতে থাকতে পারো।


"আসলে আমি মামার বাসা থেকে চলে এসেছি। যতদিন না কোন চাকুরী পাচ্ছি ততদিন তোমার বাসায়…


"হুম বুঝলাম।কিন্তু হঠাৎ বাসা কেন ছাড়তে হলো আপনাকে ম্যাডাম?


"আসলে মামা বিয়ে ঠিক করেছে।আমাদের কয়টা বছর দেখলো কি না দেখলো আমার লাইফের ডিসিশনস নিতে শুরু করে দিলো।তাও আমাকে না জানিয়েই… আর আমিও চেনা নাই জানা নাই ওরকম ছেলেকে কিভাবে বিয়ে করবো?আমার পক্ষে এটা সম্ভব না।


"আচ্ছা আচ্ছা বুঝলাম..


এমন সময় কারেন্ট চলে গেলো..রাত হয়ে গেছে


বাসায় ক্যান্ডেল ও নেই।আর ফোনের ব্যাটারিও ডেড..বাইরে তো বৃষ্টি হচ্ছে।এখন কি করবো?পুস্পিতা আমার শার্টের হাতাটা শক্ত করে ধরলো।আবারো আমার বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো।বুঝলাম ওর খুব ভয় করছে।আমি ওকে বললাম-


"ভয় পেয়ো না।কারেন্ট একটু পরেই চলে আসবে।


"হুম…


কিছুক্ষণ পরে কারেন্ট আসলো।আমি পুষ্পিতা কে ওর রুমে দিয়ে আসলাম।রাতে ঘুম থেকে উঠেছিলাম একবার দেখলাম ওর রুমের লাইটটা জ্বলছে।মনে হয় লাইট না জ্বালিয়ে ঘুমাইতে পারেনা বা অন্য কোন কাজ করছে।


পরের দিন দুপুর বেলা টেস্ট ম্যাচ দেখছিলাম।দরজা খোলাই ছিলো।ভাবিকে আসলো হাতে প্লেট দিয়ে ঢেঁকে আমার জন্য কিছু একটা এনেছে।ভালো কিছু রান্না করলেই আমাকে বাসায় ডাকে নয়তো বাসায় এসে দিয়ে যায়।আমি কিছু বলার আগেই ভাবি বললো-


"কি ছোট সাহেব কি খবর??ভাবিকে ভুলে গেছো নাকি?দেখা করো না বেশ কয়েকদিন হলো।


"আরে কি যে বলো। তোমাকে ভুললে চলে?আজকে কি রান্না করেছো??


"ভূনা খিচুড়ি..


"বাহ বেশ জমবে তাহলে দুপুরের খাবারটা।


"কি ব্যাপার বলো তো। তোমার বাসার সব কিছু এমন গুছানো লাগছে।


ব্যাপার আমিও বুঝতেছিনা ভাবি।


এমন সময় পুষ্পিতা ওর রুম থেকে বের হয়ে আসলো।ভাবি পুস্পিতাকে দেখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো-


" বিয়ে করেছো একবার জানানোর প্রয়োজন মনে করলেনা? তোমার ভাইয়াকে না হোক আমাকে তো একবার জানাইতে পারতে।


"আরে ছিঃ ছিঃ ভাবী তোমাদের না জানিয়ে আমি কিভাবে বিয়ে করবো বলো?


"তাহলে মেয়েটা কে??


কথাটা শোনার পরে আমি পুষ্পিতার দিকে তাকাইলাম।পুষ্পিতা বসতে বললো


"আমার নাম পুষ্পিতা।আমি আসলে প্রণবের ফ্রেন্ড।


ভাবী বললো-


"আমি প্রণবের ভাবী..


দুইজনের পরিচয় শেষেই গল্পের ঝুড়ি নিয়ে বসলো।আমি শুধু একবার ভাবীর মুখের দিকে তাকাই একবার পুষ্পিতার মুখের দিকে তাকাই।


ভাবী চলে গেলে পুষ্পিতা বললো


"তোমার ভাবীটা কিন্তু খুব ভালো আর অনেক মিশুক।


"হ্যা। মিশুক যে বুঝতেই পারছিলাম তোমাদের দেখে...


"প্রণব আমার রুমের লাইটটা জ্বলছেনা।একটু দেখবে?আমি লাইট না জ্বালিয়ে রাতে ঘুমাইতে পারিনা।


"আচ্ছা চলো দেখি…