সারারাত ঘুমাইতে পারিনি।শুধু বিছানায় গড়াগড়ি আর গান শুনে কাটিয়ে দিয়েছি।খুব সকাল বেলা হাটতে হাটতে কালাম চাচার দোকানের পাশে মাচাটায় বসলাম।কালাম চাচা এখনো দোকান খুলেনি।কিছুক্ষণ বাদে পুস্পিতাকেও দেখলাম এইদিকেই আসছে।চোখ দুইটা লাল হয়ে আছে। মনে হয় সারারাত কান্না করেছে।পুষ্পিতা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো...


"আসলে..


এইটুকু বলেই চুল গুলা কানের একপাশে গুঁজে দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলো।আমি বললাম


"স্যরি..


"জ্বীইই?


"আই এম স্যরি। আসলে আপনাকে কালকে ওইভাবে রেখে আসাটা উচিৎ হয়নি।


পুষ্পিতা খানিকটা হাসার চেষ্টা করলো।তারপর বললো-


"আমি তো ভেবেছিলাম আপনাকে স্যরি বলবো।আমার জন্য আপনাকে ওকয়ার্ড একটা সিচ্যুয়েশানে পরতে হলো।


"সমস্যা নেই।মনের কথা চেপে রাখতে নেই।শেয়ার করলে মন হাল্কা হয়।ও কেবল হাসলো।এইবারের হাসিটা একদম অন্যরকম। হাসিটা দেখেই আবার বুকের মধ্যে কেমন জানি করে উঠলো...


" রাত্রির সাথে ছয়মাস রিলেশন ছিলো।কখনো ওর হাসি দেখে এরকম মনে হয়নি।ওর সাথে থাকলে কেমন জানি দম বন্ধ হয়ে আসতো।আমাকে ওর গোলাম বানিয়ে রেখেছিলো।উঠতে বললে উঠতে হবে বসতে বললে বসতে হবে।নিজের কোন স্বাধীনতাই ছিলো না।পরে যখন ওর সাথে একেবারেই থাকতে পারলাম না তখন ব্রেকাপ করে নেই।ব্রেকাপের পর আমি খুব হ্যাপি ছিলাম।আই থিংক ও নিজেও এই রিলেশনশিপে হ্যাপি ছিলোনা।তাই দুইদিক থেকে কেউই আর যোগাযোগের চেষ্টা করিনি।"


পুষ্পিতা বললো


"কি মি. কই হারাইলেন? কালাম চাচা দোকান খুলেছে। আপনি কি যাবেন?


"হ্যা চলেন..


পুষ্পিতা চামচ দিয়ে চা খাচ্ছিলো আর আমি আড় চোখে দেখছি।


"এভাবে আড় চোখে দেখার কিছু নাই।আমি ওর কথায় আবারো কেবল লজ্জা পেলাম।মেয়েটা বুঝে কিভাবে যে কেউ ওকে আড় চোখে দেখছে? অদ্ভুত তো!!


এরপর একদিন নাম্বার নিয়েছিলাম।ওর হাসিটা অনেক সুন্দর।ও ফোনের অপাশ থেকে শব্দ করে হাসলে আমি এপাশ থেকে অনুভব করতাম।আস্তে আস্তে একটা ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয় আমাদের।আপনি থেকে তুমি।তবে আমাদের মধ্যে রিলেশনটা ফ্রেন্ডশিপ নাকি অন্যকিছু বুঝতে পারিনা।ও কখনো বুঝতে দেয়নি।আমি ওর জন্য কিছু একটা ফিল করি।কিন্তু কখনো জানানো হয়নি।ইচ্ছা করে জানাইনি।একটা ছেলে যদি কোন মেয়ের বিশ্বাস ভাঙে অন্য আরেকটা ছেলের বিশ্বাস অর্জন করতে অনেকটা সময় লাগে…


"একসময় বুঝতে পারলাম ওর উপরে খুব নির্ভরশীল হয়ে পরছি।ওকে ছাড়া আমার কোন কিছু ঠিক মত হচ্ছেনা।দিনে একবার কথা না হলে মনের মধ্যে কেমন একটা ছটফটানি অনুভব করতাম।তাই ইচ্ছা করে মেস চেঞ্জ করে যোগাযোগ কমিয়ে দিলাম।নিজেকে অন্য কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে লাগলাম।ও মাঝেমাঝে ফোন দিয়ে খোঁজখবর নিতো।কিন্তু আমি ফোন দিতাম না।তারপর বাবা মারা গেলো।মেইস ছেড়ে চলে আসলাম।মাস খানেক পার হওয়ার পর পুষ্পিতার মধ্যে একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম।নিয়মিত আমার সাথে কথা বলে।মাঝে মাঝে দেখাও করতে বলে।লক্ষ্য করলাম আমি আবারো ওর উপরে ডিপেন্ডেবল হয়ে পরছি..