অন্যের চোখে জীবন দেখা



  হাসপাতালে পাশাপাশি বিছানায় থাকেন ২জন রোগী। ২জনেই মৃত্যু শয্যায়। একজন রোগী থাকতো জানালার কাছে। 


 বিছানা থেকে উঠে বসার মতো শক্তি ছিল না কারোরই। তবুও জানালার কাছে থাকা রোগীটি নার্স কে ডেকে প্রতিদিন বিকেলে এক ঘণ্টার জন্য জানালার পাশে উঠে বসতেন। অপলক চেয়ে থাকেন তিনি বাইরের দিকে। 


 ১ ঘণ্টা পরে পাশের বিছানায় শুয়ে থাকা রোগীর কাছে বাইরে কি কি দেখল তাঁর বর্ণনা করতেন। তিনি প্রতিদিন বলতেন–“বাইরে অনেক পাখি উড়ে বেড়াচ্ছে। ছোট ছোট শিশুরা মাঠে খেলা করছে। বাচ্চারা কাগজের নৌকা বানিয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে পানিতে…” 


 পাশের বিছানায় শুয়ে শুয়ে রোগীটি এইসব তার কানে শুনত আর চোখে কল্পনা করতো। আর মনের আকাশে উড়ে বেড়াতো মেঘেদের সাথে। অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করতো এসব বর্ণনা শুনে। 


 হঠাৎ একদিন জানালার পাশে থাকা রোগীটি মারা গেলেন। 


 পাশের বিছানার রোগীটি তখন নার্স কে অনুরোধ করলো তাকে যেন জানালার পাশের বেড এ থাকতে দেওয়া হয়। 


 বিকেল হলো। সে আজ প্রকৃতি নিজ চোখে দেখবে। অনেক আশা নিয়ে কনুই এ ভর করে চোখ রাখলেন জানালায়, কিন্তু হায়!! সেখানে তো সাদা দেয়াল ছাড়া আর কিছুই নেই!!!! 


 নার্স কে ডাকলেন,জিজ্ঞেস করলেন–“এখানে তো দেয়াল ছাড়া কিছুই নেই! তাহলে প্রতিদিন সে আমাকে কিভাবে সুন্দর ফুল,প্রকৃতির,পাখির বর্ণনা করতো?!!” 


 নার্স হাসিমুখে উত্তর দিলো- “আসলে উনি ছিলেন অন্ধ। আপনাকে বেঁচে থাকার উৎসাহ দিতেই এসব গল্প শুনাতেন…