হঠাত নিরুপমা শুনতে পেল পিছনে নিলয় আর কাঁদছে না।নিলয় রুনা দুজনেই হেসে উঠছে একসাথে।নিরুপমা অবাক হয়ে ফিরে আসলো সবার কাছে।তখন দেখলো নিলয় আলামিন ভাইয়ার কাছ থেকে ২৫০০০টাকা নিচ্ছে। নিরুপমা রুনা কে জিজ্ঞেস করলো এটা কিসের টাকা। তখন আলামিন বললো, আমি বাজি করেছিলাম নিলয়ের সাথে। নিলয় বলেছিল তুমি নিজে এসে নিলয় কে প্রোপোজ করবে এবং এক সপ্তাহ প্রেম করে নিজেই ব্রেক আপ করবে। আমি বলেছিলাম নিরুপমা তোমাকে পাত্তাই দিবে না।তাই আমি ওর সাথে বাজি করেছিলাম কিন্তু আমি হেরে গেছি তুমি ওকে প্রোপোজ করে এক সপ্তাহ প্রেম করে এখন নিজেই ব্রেক আপ করছো তাই নিলয় জিতে গেছে। ... নিরুপমা অবাক না হয়ে পারলো না। সে তো বাজি করছে রুনার সাথে ৫০০০ টাকা আর নিলয় সেটাই করেছে ২৫০০০ টাকা। কিভাবে? তার মানে কি রুনা??? তখন রুনা বলা শুরু করলো, বললো নিরুপমা স্যরি দোস্ত।তোর সাথে এই বাজি করার জন্য টাকা টা আমাকে নিলয় ভাইয়াই দিয়েছিল।যেদিন এসাইনমেন্ট জমা দেবার পর নিলয় ভাইয়া কে ধন্যবাদ জানাতে যাই তখন তিনি এই বাজি টা করতে বলেন আর এটাও বলেন যে বাজির টাকা উনি দিবে। তাই আমি বাজি টা করি। বাকি টা নিলয় ভাইয়ার কাছেই শুনে নে... ... হচ্ছে টা কি নিলয়? নিরুপমা বললো। নিরুপমা তুমি এতটাও সুন্দরী বা চালাক নও যে আমার মত ছেলে কে এক সপ্তাহে তোমার ন্যাকামি দেখিয়ে প্রেমে ফেলতে পারবা।তুমি যেদিন আমাকে প্রথম নোটিশ করো। সেদিন আমি তোমার ব্যাপারে আলামিন এর কাছে জানতে চাই। তাতেই বেরিয়ে আসে তোমার এই ভয়ংকর রুপ টা। তাই ভাবলাম তোমাকে একটা শিক্ষা না দিলেই নয়।তখন আলামিন বললো তুমি নাকি আমাকে পাত্তাই দিবে না। আর তখনি বাজি টা করলাম আলামিন এর সাথে ২৫০০০ টাকা। আর সেটার ২০% মানে ৫০০০ টাকার বাজি করতে বললাম রুনা কে তোমার সাথে। রুনা ও তাই করলো। আর আমিও তোমার ন্যাকু ন্যাকু প্রেম সহ্য করলাম ১সপ্তাহ। আর হ্যা তুমি নাকি কখনো হারো নাই??? হারতে শিখো আজ থেকে, হারের একটা আলাদা মজা আছে। নিরুপমা জীবনে প্রথম কোন বাজিতে হেরে বাসায় গেল।সারারাত ঘুম আসছে না।সে কখনোই হারতে পারে না।সে তার হার টা মেনে নিতে পারছে না।তাকে জিততেই হবে যেভাবেই হোক। এখন জিততে হলে একটাই কাজ আছে সেটা হল নিলয়ের সাথে ব্রেক আপ না করা। কিন্তু সেটা সে আজকেই সবার সামনে করছে। তাই এটা সম্ভব না। কিন্তু করবে কি সে নিলয়ের কাছে তার হার টা মেনে নিতে পারছে না কিছুতেই। ... অবশেষে নিরুপমা একটা চরম সিন্ধান্তে উপনিত হল।যা কারো কল্পনাতেও আসতে পারে না শুধু মাত্র একটা বাজি জেতার জন্য। না না একটা নয় ২টা বাজি জিতবে সে যদি এইকাজ টা করতে পারে। . প্রথমত... সে কাল কে নিলয় কে বিয়ে করবে জোর করে রাজি করিয়ে হলেও। প্রয়োজন হলে সুইসাইড এটেম্প করবে। নিলয় কে বিয়ে করলে তাদের ব্রেক আপ হলো না মানে নিরুপমা জিতে গেল বাজি টা। . দ্বিতীয়ত... নিলয় আম্মুর পছন্দ করা গাইয়ার থেকে অনেক ভালই আছে। সো নিলয় কে বিয়ে করলে ওই গাইয়ার সাথে বাজি তে জিতবে। হানিমুন খরচ টা তার কাছে উসুল করবে। .. ... যেই ভাবা সেই কাজ। পরের দিন নিরুপমা ক্যাম্পাসে গিয়ে নিলয়ের হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে সবার সামনে নিলয় কে বললো তাকে বিয়ে করতে। নিলয় বললো অসম্ভব আমি তোমার মত মেয়ে কে কখনোই বিয়ে করবো না। তখন নিরুপমা নিলয়ের হাত ছেড়ে দিয়ে সবার সামনেই দৌড়ে ৫ তলা ভবনের উপর উঠে চিতকার করে বলতে লাগলো সবার উদ্দেশে নিলয় তাকে আজকেই বিয়ে না করলে সে সুইসাইড করবে। কিছুক্ষন এর মধ্যেই পুরো ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী উপস্থিত হলো সেখানে। আর সবার নিরুপমার জেদ সম্পর্কে ভালই ধারনা আছে। তাই সবাই নিলয় কে হাত জোর করে হলেও বিয়েতে রাজি করিয়ে কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে টা দিল... ... কাজি অফিস থেকে বের হয়েই নিরুপমার মুখে প্রথম কথা ছিল.... বাজি টা আমিই জিতলাম আর তুমি হারলে। ব্রেক আপ আর হলো না। নিরুপমা কখনো কোন বাজিতে হারে না মাইন্ড ইট.... নিলয় বেচারা অবাক হবে নাকি শকড হবে কিছুই বুঝতেছে না। একটা মেয়ে শুধু মাত্র একটা ৫০০০টাকার বাজির জন্য একটা ছেলে কে সুইসাইডের ভয় দেখিয়ে রাজি করিয়ে বিয়ে করতে পারে বলে তার ধারনার বাইরে ছিল। তাই আপাতত নিলয় কিছুই বললো না। ... নিরুপমার বিয়ের খবর টা এতক্ষনে তার আব্বু আম্মু ও জানতে পেরেছেন।প্রথমে রাগ হলেও পরে পুরো ব্যাপার টা জানতে পেরে মেনে নিয়েছেন তাই নিলয় কে নিয়েই নিরুপমা কে বাসায় যেতে বলছে।সন্ধ্যার দিকে নিরুপমা নিলয় কে নিয়ে তাদের বাসায় আসলো। এসে দেখে বাড়িতে মোটামুটি একটা বিয়ের আমেজ এসেছে।বাড়িতে কিছু আত্বীয়রাও এসেছে, যাদের কাউকে চেনা আবার কেউ কেউ অচেনা।নিরুপমার সেগুলোতে কোন খেয়াল নেই।তার চিন্তা হল সে এক বারে ২টা বাজি জিতেছে এবং তাকে কেউ কখনো কোন বাজিতে হারাতে পারে নি। ..