অসততায় কেউ কিছু পায় না



  এক জায়গায় এক স্বার্থপর লোক বাস করত। অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্যে সে সব সময় সুযোগ খুঁজতো। কিন্তু নিজের সম্পদের এক কানাকড়িও কারো সাথে ভাগাভাগি করতে রাজি ছিলো না, এমনকি তার বন্ধুদের সাথেও না, গরীবদের সাথেও না। একদিন লোকটি রাস্তায় তার ত্রিশটি স্বর্ণমুদ্রা হারিয়ে ফেললো। সে তার কাছের এক বন্ধুকে স্বর্ণমুদ্রা হারানোর কথা জানালো। সে বন্ধুটি আবার ছিলো খুব সৎ, দয়ালু, উদার প্রকৃতির মানুষ। কাকতালীয়ভাবে বন্ধুটির মেয়ে রাস্তায় এই ত্রিশটি স্বর্নমুদ্রা কুড়িয়ে পেল। বাড়িতে ফিরে সে এই কথা তার বাবাকে জানালো । তার বাবা ভাবল এটা নিশ্চয় তার বন্ধুর হারিয়ে যাওয়া সেই স্বর্নমদ্রা। তাই সে বন্ধুটির কাছে গেল তাকে মুদ্রাগুলো ফিরিয়ে দিতে। কিন্তু তার স্বার্থপর বন্ধুটি যখন শুনলো যে তার মেয়ে এই মুদ্রা কুড়িয়ে পেয়েছে তখন সে বললো যে ‘আমার মোট চল্লিশটি স্বর্ণ মুদ্রা ছিলো। তোমার মেয়ে নিশ্চয়ই এখান থেকে দশটি মুদ্রা সরিয়েছে। আমাকে তোমার চল্লিশটি মুদ্রাই দিতে হবে।’ একথা শুনে লোকটি রেগে গেল এবং মুদ্রাগুলো সেখানে রেখে চলে গেল। কিন্তু স্বার্থপর বন্ধুটি ছিলো নাছোড়বান্দা। সে বিচার নিয়ে গেল আদালতে। বিচারক তার অভিযোগ মন দিয়ে শুনলেন এবং সেই বাবা ও তার মেয়েকে ডেকে পাঠালো। যখন তাদের নিয়ে আসা হলো তখন সে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করা হল যে সে কতটি মুদ্রা পেয়েছিলো? মেয়েটি বলল যে ত্রিশটি স্বর্ণমুদ্রা। বিচারক আবার স্বার্থপর লোকটিকে জিজ্ঞেস করলো সে কতটি মুদ্রা হারিয়েছিল? লোকটি জানালো যে ‘মোট চল্লিশটি স্বর্ণমুদ্রা’। বিচারক এবার লোকটিকে জানালো যে মেয়েটি যে মুদ্রা কুড়িয়ে পেয়েছে সেগুলো তার নয় কারণ মেয়েটি পেয়েছে ত্রিশটি মুদ্রা কিন্তু সে হারিয়েছে চল্লিশটি মুদ্রা। সে মেয়েটিকে এই মুদ্রাগুলো তার সাথে নিয়ে যেতে বললো এবং জানালো যে যদি কেউ জানায় যে ত্রিশটি মুদ্রা হারিয়েছে তবে তাকে আবার ডেকে পাঠাবে। বিচারক লোকটিকেও বললো যে কেউ যদি খবর দেয় যে সে চল্লিশটি স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছে তবে তাকে ডেকে পাঠানো হবে ।তখন সাথে সাথে স্বার্থপর লোকটি স্বীকার করলো যে সে মিথ্যা বলেছিলো এবং আসলে সে ত্রিশটি স্বর্ণমুদ্রাই হারিয়েছে। তাই তাকে সেগুলো ফিরিয়ে দেয়া হোক। কিন্তু বিচারক তার কোনো কথাই শুনলো না।